কুরবানীর আগে দশটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ প্রস্তুত করুন সঠিকভাবে2025

 কুরবানীর আগে যে কাজগুলো অবশ্যই করে ফেলবেন

পবিত্র ঈদুল আযহার মূল বার্তা হল ত্যাগ ও আত্মসমর্পণ ইসলাম ধর্মে কুরবানী শুধু একটি প্রথা নয়, এটি ইবাদতের অংশ কোরবানি আর কয়েকদিন পরেই ইনশাল্লাহ ইতিমধ্যে কোরবানির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। আমরা অনেকেই কুরবানী করার জন্য যত প্রস্তুতি আছে সেগুলো ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি, কোরবানিকে সামনে রেখে কয়েকটি কথা তুলে ধরার চেষ্টা করব ওমা তৌফিক ইল্লা বিল্লাহ, অনেকেই কোরবানির আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে নানা সমস্যায় পড়েন তাই সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরী। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো, কোরবানির আগে আপনার করণীয় দশটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যাতে করে আপনি শান্তিপূর্ণ ও সুস্থভাবে কোরবানি আদায় করতে পারেন।কোরবানির নিয়ত ও প্রস্তুতি ঠিক করে নিন

পোস্ট সূচিপত্র:

  • ইসলামী নিয়ম মেনে কোরবানি নিশ্চিত করুন
  • ছুরি ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখুন
  • কোরবানির স্থানের প্রস্তুতি নিন
  • পশুকে গোসল করান পরিচর্যা করুন
  • পশু রাখার জায়গা প্রস্তুত করুন
  • নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই না করা
  • কুরবানীর পশু নির্বাচনের পূর্বে পরিকল্পনা করুন
  • পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিন
  • গোস্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনা করে নিন
  • উপসংহার :

কোরবানি একটি ফরজ বা ওয়াজিব এবাদত নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির উপর, অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নর নারী যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক তাদের উপর কোরবানি ওয়াজিব। তাই আগে নিজের অবস্থান যাচাই করুন এবং নিয়ত করুন। আমাদের দেশে যত বেশি নামাজী আছে তার চাইতে বেশি কোরবানিদাতা পাওয়া যায়, কোরবানি বিপুলসংখ্যক মানুষে করলে কি হবে এই ইবাদতটিতে এত বেশি ত্রুটি এত বেশি বিচ্যুতি এত বেশি ভুলভ্রান্তি হয় যার কারণে বেশিরভাগ লোকের কোরবানি সঠিক হয় না। বিশুদ্ধ হয় না ফলে এই কুরবানি এবাদত হওয়ার পরিবর্তে কোন কোন ক্ষেত্রে এটা বরং গুনাহের কারণ হয়, সেজন্য এই ভুলগুলো বিচ্যুতি গুলো সম্পর্কে আমাদের কিছু ধারণা থাকা দরকার, এজন্য কিছু গাতব্য বিষয় কিছু প্রচলিত ভুল ত্রুটি কোরবানি কে কেন্দ্র করে সেগুলো আমরা শুধুমাত্র আজকে আলোচনা করার চেষ্টা করব। কোরবানির যে ভুল ত্রুটিগুলো বিচ্যুতি গুলো আমাদের সাধারণত অহরহ হয়ে থাকে সেই ভুলত্রুটি সেই বিচ্যুতি গুলোর ভিতরে সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বড় এবং প্রধান ভুল হলো কোরবানির ক্ষেত্রে নিয়তের অশুদ্ধতা বহু লোক আমরা কোরবানি করি। অথচ আমাদের কোরবানির আগে আমাদের নিয়ত টাকে সাফ এবং পরিষ্কার করে নিতে পারিনা। বিশেষ করে আমাদের দেশের কথা যদি আমরা বলি আমাদের দেশের মানুষ যারা কোরবানি করেন আলহামদুলিল্লাহ, এদের ভেতরে বেশিরভাগ লোকের কোরবানি এর পেছনে সঠিক এবং শুদ্ধ নিয়ত কাজ করে না। সমাজের বিরাট একটা অংশ আছে যারা কোরবানি করে সামাজিক মর্যাদার দিকে লক্ষ্য করে দুঃখ, লজ্জা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ কি বলবে সমাজের মানুষ কোরবানি না দিলে কি বলবে বহু বছর কুরবানী দিয়ে আসতেছি এ বছর না দিলে কি হবে অনেকে কোরবানি করেন যে নতুন আত্মীয় হয়েছে অন্য বছর ভাগে দিলেও এ বছর আর ভাগে দেওয়া যাবে না। কারণ নতুন আত্মীয় হয়েছে তার কাছে একটা মান মর্যাদার ব্যাপার আছে। আর এর বাইরে সবচাইতে বড় অংশ নিয়তের ক্ষেত্রে যে ভুলটা করে সেটা হল কুরবানীর ক্ষেত্রে, এটাকে গোস্ত খাওয়ার একটা উৎসব গোস্ত খাওয়া গোস্ত সংগ্রহ করা অল্প পয়সায় ভালোগ্রস্ত সংগ্রহ করা এই উদ্দেশ্যে এই ধান্দায় সমাজের বিরাট একটা অংশের মানুষ কুরবানী করে। প্রিয় ভাইয়েরা অতএব কোরবানির ক্ষেত্রে এই যে নিয়তের অশুদ্ধতা এই জিনিসটা আমাদের খুব বেশি খেয়াল রাখা উচিত। প্রিয় ভাইয়েরা কোরবানির ক্ষেত্রে আরেকটা বড় ভুল হল যারা কোরবানি দেন বিশেষ করে যারা গরু কোরবানি দেন এদের বেশিরভাগ লোকই গরুর গোশত বানানোর জন্য ছুরি এ গুলোর ব্যবস্থা করে, কিন্তু গরু জবাই এর জন্য যে ছুরির ব্যবস্থা করা দরকার একটা ধারালো ছুরির ব্যবস্থা করা দরকার সেই ব্যবস্থাটুকু বেশিরভাগ লোক করে না। তাকায় থাকে এলাকার ইমাম সাহেব মোয়াজ্জেম সাহেব বা মৌলভী সাহেব উনি করে দিবে। অতএব ছুরি উনি নিয়ে আসবে তো মৌলভী সাহেব যে জবাই করেন ওই বেচারার কাছে তো ছুরি চার-পাঁচটা থাকে না ছুরি একটা থাকে প্রথম প্রথম যে গরুগুলো জবাই করে উনি সেগুলো মাশাল্লাহ খুব ভালোভাবে জবাই হয়ে যায় কিন্তু এরপরে তিন চার পাচ নম্বর সিরিয়ালের যে গরুগুলো আছে সেগুলো সহজে জবাই হয় না কারণ ছুরির ধার কমে যায় অতএব যিনি কোরবানি দিবেন তার দায়িত্ব হল কোরবানির পশু জবাই এর জন্য ধারালো ছুড়ির ব্যবস্থা করা।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো:

  • কোরবানি কার উপর ওয়াজিব?
  • পশু কিভাবে নির্বাচন করব?
  • কুরবানীর আগে পশু গোসল করানো কি জরুরি?
  • জবাইয়ের জন্য কসাই না পেলে কি করব?
  • একাধিক ব্যক্তি কি গরু কোরবানি করতে পারে?


জ্ঞাত হও এ দিনটি তোমাদের সম্মানিত দিবস পবিত্র ঈদ মোবারক। আল্লাহ একে উচ্চ সম্মান ও ইজ্জত দিয়েছেন করিয়াছেন হেদায়েত ক্ষেত্র, যিনি উন্মুক্ত ও উম্মতে মোহাম্মদীকে দিয়েছেন খাছ বৈশিষ্ট্য তিনি পরীক্ষা করেন স্বীয় বন্ধু ইব্রাহিম নবীকে নিজ পুত্র ইসমাইলের কোরবানি দ্বারা এর নির্দেশ দেন। সত্য স্বপ্নের ছিল, না তা অসত্য ইব্রাহিম স্বীয় পুত্রকে স্পষ্ট বলিলেন ইসমাইল স্বপ্নে দেখিয়াছি তোমাকে আল্লাহর রাহে কুরবানী করিতেছে এতে তোমার কি মত, ইসমাইল বললেন পিতা আপনি যা আদিষ্ট তাই করুন ইনশাল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীল রূপে পাইবেন। ইব্রাহিম স্বপ্ন তুমি বাস্তবায়িত করিলে। এভাবেই নিষ্ঠাবানদের মুক্তি দেই। ছিল এটা চরম পরীক্ষা। ফলে দিলাম তাকে এক উত্তম কোরবানি পশু। ইব্রাহিম পর্বত থেকে আসন্ন আগত দুম্বাটিকে ধরো এবং তোমার পুত্রের স্থলে উহাকে কোরবানি করো। অনন্তর সে দুম্বাটি ছিল শৃঙ্খ বিশিষ্ট হৃষ্টপুষ্ট, ৪০ বছর বেহেস্তের বিচরণকারী। ইব্রাহিম নবী ও ধরিয়া যবেহ করিলেন অভাবিত  বস্তু পাইয়া ইব্রাহিম পুত্রের স্থলে পশু কোরবানি করিল। আল্লাহর শোকর আদায় করিলেন, ইব্রাহিম ইসমাইলের সম্মান এজন্য ইহা সম্ভব হইয়াছিল এ থেকেই কিয়ামত পর্যন্ত কোরবানি করা সুন্নত, ইব্রাহিম নির্ধারিত হইল। তাই হে আল্লাহর বান্দারা। এ মাসে তোমরাও কোরবানির আদর্শ কায়েম করো। বস্তুত প্রবাহিত কোরবানির রক্ত তুল্য এই দিবস বনি আদমের অন্য কোনো পুণ্য আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় নাই, ইহা মাটি স্পর্শের আগেই কবুল করা হয়। এরই খবর ও নির্দেশ দিয়েছেন বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম। সুদর্শন শৃঙ্খের দুটি দুম্বা তার পবিত্র পদ উহার ঘাড়ে রাখিয়া নিজ হাতে কোরবানি করেন। প্রথমটি জবেহ করিয়া বলেন বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার। খোদা ইহা তোমার থেকে তোমার জন্যই করিলাম। ইহা মোহাম্মদ ও তার সন্তানের তরফ থেকে দ্বিতীয়টি, বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার কোরবানি করেন ও বলেন আল্লাহ এই কোরবানিটি করা গেল যারা আমার প্রেরণে ফেরেশতাতে বিশ্বাসী এবং মুশরিক হইয়া মরে নাই তাদের তরফ থেকে। হুজুর আরো বলেন বিত্তবান যে কোরবানি করে না, ধনী যে কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। ওহে আল্লাহর বান্দারা এই দিনে কোরবানি করিয়া আল্লাহর নৈকট্য লাভ কর কারণ উহাই কিয়ামতে হইবে তোমাদের বাহন। কানা,খোড়া পীড়িত চর্মরোগ ও কান কর্তন বিশিষ্ট এবং দন্ত্যহীন মোটকথা গোস্ত বিনষ্ট কারী যাবতীয় দোষ মুক্ত পশু কোরবানি থেকে পরিহার কর - হইতে হইবে তা সম্পূর্ণ দোষমুক্ত। একটি হৃষ্টপুষ্ট  ছাগল দুইটি দুর্বল ছাগল হইতে উত্তম, সাতজন পর্যন্ত একটি উট কিংবা গরু কোরবানি করা যায় তবে একটি সাফ করিবে মাত্র একজনের ঈদুল আযহা ও তারপরে দুই দিন কোরবানি করা যাইবে তাও নামাজের পরে পূর্বে না। উত্তম কোরবানির পশুকে পানি পান করাইয়া কোরবানি দাতা নিজে বা তার প্রতিনিধি কারো দ্বারা কোরবানি করা।

কুরবানীর পশু নির্বাচনের পূর্বে পরিকল্পনা করুন

বিশ্বস্ত খামার বা হাট থেকে স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্থ পশু নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোরবানির পশুর নির্দিষ্ট বয়স ও শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অখন্ডতা নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোরবানি সহিহ হয়।

পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিন

বিশেষত এখন বিভিন্ন সংক্রমণ ভাইরাসের কারণে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরী অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রশ্নটি সত্য কিনা যাচাই করে নেন ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়ে কোরবানি দিলে কি কুরবানী হবে ত্রুটিযুক্ত পশু একটা পশুর ভেতর কোন দোষ আছে ত্রুটি আছে সমস্যা আছে রোগ বালাই আছে ওইটা জবাই করলে খেতে পারবেন কিন্তু কোরবানি দিলে কোরবানি হবে কিনা এর উত্তর হলো কিছু কিছু ত্রুটি আছে যে ত্রুটিগুলো থাকলে পশু কোরবানি করলে কোরবানি যথেষ্ট হবে না আর কিছু কিছু ত্রুটি আছে যেগুলো থাকলেও ত্রুটি সহকারে কোরবানি দেওয়া যাবে কোন ত্রুটিতে কোরবানি দিলে কোরবানি হবে না একটা হল ল্যাংড়া হওয়া এমন ল্যাংড়া যে পশুর পালের সাথে চললে পিছিয়ে যায় তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না অথবা জবাই করার জায়গা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার ক্ষমতা নেই তাকে ঠেলে নিয়ে যেতে হয় ছেচরাইয়া যাইতে হয় শক্তি নাই পায়ে একটা হোক দুই পা হোক এরকম ল্যাংড়া খোঁড়া যদি হয় তাহলে ওইটা দিয়ে কোরবানি দিলে কোরবানি যথেষ্ট হবে না হাদিসে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা আছে আরেকটা হল যে এই পরিমাণ রুগ্ন অসুস্থ রোগা যে রোগের কারণে চলাফেরা করতে পারেনা বা হাঁটার শক্তি নাই প্রচন্ড রোগা দুর্বল সেটা দিয়ে কোরবানি দিলেও কোরবানি হবে না আরেকটা হলো যে অন্ধ এমন অন্ধ হয় এক চোখ অন্ধ চোখে এমন সমস্যা আছে যে চোখে দেখে না স্বাভাবিকভাবে ঘাস টাস রাখলেও সে বোঝেনা কোনটা কি অথবা ওই জায়গা পর্যন্ত দেখে একা একা যেতে পারে না তার মানে চোখে বড় সমস্যা আছে এরকম থাকলে কোরবানি হবে না একটা শিং অথবা দুইটা সিম গোড়া থেকে উঠে গেছে এরকম যদি হয় ওইটা দিয়ে কোরবানি দিলে কোরবানি হবে না তবে যদি সামান্য হয় সামান্য শিং ভাঙ্গা সামান্য কানকাটা সামান্য একটু পায়ে সমস্যা সামান্য অসুখ-বিসুখ আছে এরকম যদি হয় সেগুলো দিয়ে কোরবানি দিলে কোরবানি হয়ে যাবে অর্থাৎ ত্রুটি যদি ছোট হয় সমস্যা নেই বড় ত্রুটি যদি হয় ওই পশু দিয়ে কোরবানি দিলে কোরবানি যথেষ্ট হবে না এইজন্যে পশুর স্বাস্থ্য লক্ষ্য রাখতে হবে

নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই না করা

নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই না করা নিজের পশু নিজের কোরবানির পশু নিজের হাতে জবাই না করা এটা আরেকটা ভুল আমাদের দেশে লোক কোরবানি করতে যে নিজের পশুটা নিজে জবাই করেন না খুব কম সবাই ওই হুজুর বা মৌলভী সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকেন অথচ বুখারী মুসলিমের হাদিসে আসছে নবী করীম সাঃ তার কোরবানির পশু নিজের হাতে তিনি জবাই করেছেন তিনি দুটি কুরবানী করেছেন তার দুইটাই তিনি নিজের হাতে জবাই করেছেন এখান থেকে বোঝা যায় যে কোরবানির পশু নিজের হাতে জবাই করা বেশি উত্তম আপনার পক্ষে যদি নিজের কোরবানি নিজে দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে একজন দক্ষ কসাই ঠিক করে নিন অদক্ষ কসাই দ্বারা কোরবানি দিলে পশুর কষ্ট হয় এবং শরীয়ত অনুযায়ী সঠিকভাবে কোরবানি সম্পন্ন নাও হতে পারে তাই অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত  কসাই বেছে নিন

পশু রাখার জায়গা প্রস্তুত করুন

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রোদ বৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত এবং পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা সহ একটি নিরাপদ জায়গা পশুর জন্য নির্ধারণ করুন।

পশুকে গোসল করান পরিচর্যা করুন

পশু কোরবানির আগে গোসল করানো নখ ও অতিরিক্ত লোম কেটে দেওয়া সুন্নত। এটি শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয় বরং স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অনেক জরুরী ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে পশুকে গোসল ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে যাওয়া জরুরী কারণ নামাজের পরে কোরবানির কার্যক্রম শুরু হয়ে যায় তাই আগে থেকে প্রস্তুত রাখা ভালো।

কোরবানির স্থানের প্রস্তুতি নিন

কোরবানি কোথায় দিবেন তা আগে থেকে নির্ধারণ করে ফেলুন যদি নিজ বাড়িতে দেন তাহলে নির্দিষ্ট একটি পরিচ্ছন্ন জায়গা প্রস্তুত রাখুন যাতে করে ভালোভাবে কোরবানির কার্যক্রম ও গোশত বন্টন সম্পন্ন করতে পারেন সরকারি অনুমোদিত স্থান হলে সময়মতো যোগাযোগ করে রাখুন।

ছুরি ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখুন



কুরবানী করার আগে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল একটি ধারালো ছুরির ব্যবস্থা করা যাতে করে সুন্দরভাবে কোরবানির কাজ সম্পন্ন করতে পারেন এবং একে অপরে ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সহযোগিতা করতে পারেন জবাইয়ের জন্য ধারালো ছুরি গ্লাভস পানি ব্যাগ ইত্যাদি অন্যান্য যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত করে রাখুন ছুরি ধারালো না হলে পশুর অনেক কষ্ট বাড়ে যা শরীয়তের পরিপন্থী।

গোস্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনা করে নিন

ফ্রিজ বা শীতল স্থানে গোস্ত সংরক্ষণের জন্য জায়গা তৈরি করুন আপনি যদি গরিব এতিম মিসকীনদের মাঝে বিতরণ করতে চান তাহলে পরিবহন ব্যবস্থা ঠিক করে নিতে পারেন যাতে করে সঠিক ও সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।

ইসলামী নিয়ম মেনে কোরবানি নিশ্চিত করুন

কোরবানির সময় বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলে জবাই করতে হবে এরপর তিন ভাগে গোশত বন্টন করতে হয় একভাগ দরিদ্র ও এক ভাগ নিজের জন্য একভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য।

কোরবানি কার উপর ওয়াজিব?

যে ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক মুকিম অর্থাৎ ভ্রমণরত নয় এবং নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

পশু কিভাবে নির্বাচন করব?

স্বাস্থ্যসম্মত নির্দিষ্ট বয়স পূর্ণ করা এবং কোন অঙ্গহানি বা ত্রুটি যুক্ত নেই এমন পশু নির্বাচন করতে হবে।

একাধিক ব্যক্তি কি গরু কোরবানি করতে পারে?

হ্যাঁ সাত জন পর্যন্ত ব্যক্তি একটি গরু বা উট কোরবানি করতে পাড়ে তবে সবার নিয়ত সহিহ হতে হবে।

কুরবানীর আগে পশু গোসল করানো কি জরুরি?

কোরবানির আগে পশু গোসল করানো সুন্নাত এবং স্বাস্থ্যগতভাবে ভালো এতে পশুর পরিছন্নতা নিশ্চিত হয়।

জবাইয়ের জন্য কসাই না পেলে কি করব?

আপনি নিজেও কোরবানি করতে পারেন নিজের কোরবানি নিজে দেওয়া উত্তম তবে শরীয়তের নিয়ম জানা আবশ্যক না জানলে অভিজ্ঞ কারো সহযোগিতা নিতে হবে।

উপসংহার :

একটি ছোট প্রস্তুতি অনেক বড় সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে কুরবানি শুধু পশু জবাই নয় এটি আত্মশুদ্ধির একটি মহান এবাদত আল্লাহর নির্দেশ পালনের নিদর্শন কোরবানি হল তাকওয়া ও খোদাভীতি অর্জনের মাধ্যম আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা সঠিক প্রস্তুতির মাধ্যমে এই ইবাদতকে আরো পবিত্র ও অর্থবহ করে তুলুন। আল্লাহ আমাদের কোরবানি কবুল করুন এবং আমাদের অন্তরকে পবিত্র করে দিন। কুরবানী শুধুই পশু জবায়ের আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং আত্মশুদ্ধি ত্যাগ এবং আল্লাহর প্রতি ভালবাসা উপায়ের এক মহান উপায়।

 সবাইকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকে এ পর্যন্তই অন্য দিন অন্য কোন টপিকে আবার দেখা হবে আপনাদের সাথে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url